নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীন একটি প্রকল্পে ড্রাইভার নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পে’ ড্রাইভার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১২ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা। মোট ১১৫ জন ড্রাইভার নিয়োগের লক্ষ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
সূত্র বলছে, নিয়োগ কমিটির সভাপতি এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বয়জার রহমানের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেন ও পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছেন।
যদিও এটি প্রকল্পভিত্তিক নিয়োগ, মূল নিয়ন্ত্রণ থাকে প্রশাসন শাখার হাতে, যেটির নেতৃত্বে রয়েছেন ডা. বয়জার। প্রকল্প কর্মকর্তারা এখানে তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয়। অফিস সহায়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে জড়িত বলে জানা গেছে।
আরও জানা যায়, ডা. বয়জার রহমান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিজস্ব পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ১১৫টি পদের নিয়োগে কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ লেনদেনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক সরদার, রনজিৎ কুমার ও অফিস সহায়ক আব্দুল কাদেরসহ আরও কয়েকজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা হয় সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে। নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে সভাপতির কাছ থেকেই। তাদের কার্যক্রম ছিল অনেকটাই প্রভাবহীন।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক পরীক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এতে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের। মোট ১,৩০০ জন পরীক্ষায় অংশ নিলেও ৩৫১ জনের নাম প্রাথমিকভাবে প্রকাশ করা হয়, যার মধ্য থেকে ১১৫ জন চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাবেন। বাকিরা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকবেন।
নিয়োগ কমিটিতে আরও ছিলেন—প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, বিআরটিএ'র পরিদর্শক মুহাম্মদ অহিদুর রহমান, বিএলআরআই'র পিএসও ড. মো. শাহীন আলম, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস এবং অধিদপ্তরের পিইসি শাখার চীফ ডা. মো. হাবিবুর রহমান।
এই বিষয়ে ডা. বয়জার রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।